ডাকপিয়ন!
একটা চিঠি দিবো! পৌঁছে দিবে?
ঠিকানাটা পাওয়া খুব বেশি দুর্লভ !
তাইতো আজকাল চিঠি পাঠালে তুমি তাকে আর খুঁজে পাওনা।
চিঠি দিয়ে উত্তরের আশায়
বসে থাকি দিনের পর দিন!
উত্তর আর আসেনা!
ডাকপিয়ন!
আব্বুকে জানিও, এখন আর সময়মত গোসল হয়না।
খাবার খেতেও বড় অনিয়ম।
আম্মুও না বেশ বদলে গেছে!
সেই আগের মত রুটিনবাঁধা
জীবনটা তার এখন আর চলেনা।
ডাকপিয়ন!
আব্বুকে জিজ্ঞেস করো!
এখন কি তার মনে কোন প্রশ্ন
জাগে না?
জানতে ইচ্ছে করে না কোন কিছু?
জানতে ইচ্ছে করে না, তার আদরের মেয়েটি কেমন আছে?
মা’ বলে ডাকতেও আজ তার বড্ড অনীহা।
কই আগে তো একটু পরপরই ফোন দিতো!
মাঝে মাঝে ফোনের ক্রিংক্রিং শব্দে বিরক্ত হয়ে যেতাম!
কারণ মিথ্যে করেও অনেক সময় তাকে বলতে হতো, গোসল সেরেছিতো; সেই কখন!
সময়মত খাবারও শেষ করেছি।
একদমই দেরি করিনি!
আব্বু না ভুলো মন!
যেন বুঝতেই চাইতো না!
আমি এখন অন্য ঘরের বউ,
হাজার রকমের দায়িত্ব!
চাইলেই কি তার সেই মিলিটারি রুটিনে চলা যায় !
ডাকপিয়ন!
আব্বুকে জানিয়ে দিও,
এখনো যখন বাড়ির খুব কাছাকাছি পৌছে যাই।
মনে মনে বাসস্টপে দাঁড়িয়ে তাকেই খুঁজি।
এখনও কোনো খুশির সংবাদ হলে আগে তাকেই মনে করি।
আজও কোনো সমস্যায় পড়লে স্বপ্নের মাঝে আমি আমার সুপারম্যানকেই খুঁজি!
খুব বেশি মনে পড়লে তার প্রিয় শার্টের ভাঁজে তার শরীরের গন্ধ শুকি।
ডাকপিয়ন!
তাকে জিজ্ঞেস করো,
হঠাৎ করে কাউকে কিছু না বলেই
ঠিকানাবিহীন কোন শহরে পাড়ি দিয়েছে সে?
এতো কিসের তাড়া ছিলো তার?
খুব কি অভিমান ছিলো আমাদের প্রতি?
তাকে বলে দিও,
তার দেয়া শেষ দেখার শেষ চুমুটি ললাট মাঝে,
আজও যত্ন করে তুলে রেখেছি আমি!
ডাকপিয়ন!
জানো!
ছোটবেলা বড় বড় অক্ষরে নানান আবদারে ভরা চিঠি লিখতাম
ক্যান্টনমেন্টের ঠিকানায় ছোট্ট আনাড়ি আমি।
তখন উত্তরও খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছে যেত আমার বাড়ি!
উত্তর দিতে দেরী হলে কত গাল ফুলিয়েছি ।
আচ্ছা, তার শহর কি এখন অনেক বেশি দূরে?
তাই খুঁজে পাওনা তাকে তুমি!
ডাকপিয়ন,
আব্বুকে বলে দিও,তাকে বড্ড বেশি মিস করি আমি!
Views: 376