তাপস চক্রবর্তীর তিনটি কবিতা
১
জলের খেলা
এখন তুই মগ্ন বসন্তের বাসন্তিক যোগাসনে।
তোর
আকাশে সিঁথিকাটা পথ– সিঁদুরে এখন রঙিন।
অথচ ঊনিশের ব্যর্থ উপনিষদ ব্যবচ্ছদ করি
দেখি, শঙ্খের ওপারে এখনও কিছু নোনাপানি
এখনও ওখানে শ্রাবণ হানে বরষা বিহীন।
পঁচিশের দৈর্ঘ্য প্রস্থে বিশাল আয়তক্ষেত্র
এখানে জমে আছে দীর্ঘ অক্ষমতা…
এখনও এখানে ওখানে বিন্দাস কেউ।
কেউ মহানগরের কোলাহলে।
কেউ এখনও আমার মতো একেলা কাঁদে।
কেউ কেউ বিদিশার ধূসরে মশগুল পথ ভুলে।
জীবনের গাণিতিক ব্যাখা যেনো স্বয়ংক্রিয়।
ভুলে যাওয়া পাখির সন্ধানে…
বিগত সবকিছু ভুলে– তবুও ফিরে আসি,
সরল গতরে…
পরতে পরতে দেখি, এখনও খেলো জলের খেলা।
২
ত্রিকোণমিতির সংজ্ঞা
এ প্লাস বি এর গাণিতিক ব্যাকরণ ভুলে…
বৃত্তের ব্যাসার্ধ মাড়িয়ে চতুস্কোণে মানুষ।
ঈগলের চঞ্চু ভিজে আসে খুনের মিছিল
জ্যামিতির ভূমিতে ভাসে– যজ্ঞের অনল।
শেষ অস্তাচলে বৃক্ষের স্কেলিং রেখায়
ঝরে পড়া হলুদ পাতার মিছিলে দেখি–
মিছিলে যুবতী ঈগলের ওম্ ওম্ ধ্বণি
এ যেনো শশ্মানের পোড়া মাংসের গন্ধ।
রোদালা দুপুরে– ত্রিকোণমিতির সংজ্ঞা…
আবিরে চিলের ডানায় ভাসে সমুদ্রনাট
অথচ বধির সমিতির ইশতেহার পাঠে
ওম্ শব্দের ব্যবচ্ছেদ– জলজ সম্পদে।
কাঁকড়ারা হেসে ওঠে– শব্দ হিল্লোলে…
শামুকের কান্নায় নিমর্জন পানের বরাজ
অথচ ভুত ভবিষ্যতের অন্ধকারে ঈশ্বর…
রাষ্ট্রধর্মের বায়োনিকে নাচে ধানশালিক।
৩
নুনভাত
আকাশে ভাসে নুনভাতের কোলাহল
বিজয়ার ধূমে
তোর ঘামে ভেজা চুকচুক শরীর।
এখনও রুপোলী গন্ধে মনে পড়ে–
তোকে…
যেমন করে তুই, হেঁটে গেছিস স্মৃতি মাড়িয়ে
দূরে বহুদূরে।
সটিবনে বসে বসে রোজ দেখি জোনাকির
দেহবিলাস
ঝিঁঝিঁর কলতানে কলতলায় ক্যাচ ক্যাচ
এ যেনো স্মৃতির পাহাড়।
আচ্ছা আমাকে কি মনে পড়ে,
তোর ভীষণ জ্বরে?
আঁকড়ে ধরা সাপের মতো পোষা বিড়ালের
লোমে
শ্যাওলা গাছের পরতে পরতে
নীরব পানের বরাজে নিশ্চুপ নদীর স্রোতে।
এখনও আছি– বেঁচে আছি
অন্যরকম চোখেরজলে।
Views: 147