ঐ যে এঁকেবেঁকে এগিয়ে যাওয়া পথ একত্রিত করেছিল আমাদের। আবার আমরা যদি চাই তবে আবারো আলাদা দুটি পথের যাত্রী করবে আমাদের।এটা সম্পুর্ণ নির্ভর করে আমরা চাই কিনা?
রায়নার এমন প্রশ্নে হতচকিত হয়ে আবির রায়নার হাত নিজের হাতে নিয়ে জানতে চাইলো কি হয়েছে তোমার?
এ কেমন প্রশ্ন করছো?
সাদা সাদা দুরের কাশফুলের হাওয়ায় দুলতে দেখা রায়না চোখ না সরিয়ে উত্তর দিল কেন জানিনা মনে হচ্ছে আমাদের বন্ধুত্বের এই পথ চলা হঠাৎ ঐ বাঁকে গিয়ে হারিয়ে যাবে।
আবির একটু হেসে উত্তর দিল । সবটা তো তোমার জানা রায়না । এই সময় থেমে না গেলেও আমরা একদিন থেমে যাবো এটাই তো আমাদের নিয়তি।
থাক না সে সব কথা। চলো সামনের দিকে একটু এগিয়ে গিয়ে তোমার প্রিয় গরুর দুধের চা খাই।
চলো যাই। রায়নার সাথে আবিরের বন্ধুত্বের মেয়াদ দীর্ঘ দিনের । বিশেষ একটি আয়োজনে ওরা বন্ধুদের সাথে একসাথে হয়েছিল । সময়ের পলকা হাওয়ায় কত চড়ায় উত্তরায় পেরিয়ে ওরা এগিয়ে গেছে সামনের পথ । তবুও ওদের বন্ধুত্বের বন্ধন রয়ে গেছে।
রায়নার সাজানো গোছানো জীবন কোন এক অদৃশ্য ইশারায় এলোমেলো হয়ে গেছে। বেঁচে থাকার যুদ্ধে প্রতিনিয়ত হেরে যাওয়া একজন মানুষ ডুবতে ডুবতে একটু মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বেঁচে আছে।
আবির সবটা জানে ।ও রায়নাকে খুব ভাল বুঝতে পারে তাই হঠাৎ ওর অবসর হলে কোন একটা বিকাল রায়না কে নিয়ে নদীর দিকটায় আসে। রায়না ও না করে না।
আবিরকে নিয়ে রায়নার মনে অনেক প্রশ্ন আসে। অনেক বার জানতে চেয়েছে আবিরের কাছে। কিন্তু সব কিছু এড়িয়ে গেছে আবির। বলে থাক না সেসব কথা। চলো দু’জন মিলে গল্প করি। অথচ রায়না কথার ছলে কখন আবিরকে তার জীবনের কথা বলে ফেলে নিজেই বুঝতে পারে না।
আবির এক অদ্ভুত মানুষ হয়ে আছে রায়নার কাছে। বন্ধুত্বের বন্ধনে নিজেদের বেঁধে রেখেছে অথচ সামনের দুজনের পথ সম্পুর্ণ আলাদা।
আবির রায়নার তাড়া দেয়,কি এত ভাবছো আজ ?
কিছুই না চলো এগিয়ে যেতে হবে। সন্ধ্যার পর রাস্তায় প্রচুর যানযট হবে । আমাকে আবার যেতে হবে অনেকটা পথ।
ভাবছো কেন আমি এগিয়ে দেবো।
না লাগবে না ।পথে একটা কাজ আছে । ওটা সেরে তবে বাসায় ফিরতে হবে।
রায়নার পৃথিবীর সব দরজা খোলা। কখন কোথায় দিয়ে দমকা হাওয়ায় সব এলোমেলো করে দেয় সব সময় রায়নার সে অপেক্ষা ।
তারমধ্যে হঠাৎ বৃষ্টির মত আবির এসে কিছু ক্ষণের জন্য একটু ভাল লাগার পরশ বুলিয়ে দেয়। শেষ আমন্ত্রণের অপেক্ষায় থাকা রায়নার কাছে সেটাও বা কম কিসের..
Views: 36