পথের বাঁকে তোমার সাথে
_______মোঃআব্দুল্লাহ রিফাত
বনের মাঝে বনের লতা
পাতায় পাতায় ফুল,
তোমায় একটা নজর দেখার তরে
হচ্ছি আমি আকুল!
মুশকিলে পড়ে গেছি।যখন তোমার মাঝে আমার নিত্য বিচরণ ছিলো তখন তোমার কাছে যেতে আমার বড্ড বিরক্ত লাগতো।কিন্তু এখন তোমার কাছে নিত্যদিনই যাওয়ার মতো উপায় আমার কাছে নেই।তোমাকে এখন আমার প্রতিক্ষার প্রতিক্ষণে মনে পড়ে।তোমার বুকেই সারাক্ষণ থাকতে ইচ্ছে করে।কিন্তু তার উপায় কই?এখন তোমার কাছে যেতে চাইলে আমার হাজারটা বাহানা ধরতে হয়।
কোনো একদিন আমার পড়ালেখা বন্ধ হবার উপক্রম।ছোটোবেলা থেকেই অনেক দুষ্টুমি আর চাঞ্চল্যে ভরা জীবন আমার।একটা সময় আমার দুষ্টুমির মাত্রা এতোটাই বেড়ে গিয়েছিল যে আমিও একজন ছাত্র তা ভুলে গিয়েছিলাম।দিনরাত কোন পড়াশোনা নেই।সারাদিন টোটো করে ঘুরে বেড়ানো আর রাতে এসে ঘুমিয়ে পড়া।তাই রেজাল্টটাও হয়েছিলো ঘুমিয়ে পড়ার মতো।
লোকে বলে সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস,অসৎ সঙ্গে সর্বনাষ।আমিও ঠিক এই উক্তিটির কাছেই পরাজিত হয়েছিলাম।কিছু খারাপ ছেলের সাথে একটা ভালো ছেলে থাকলে সেও যে খারাপ হয় তার বাস্তব প্রমান আমি নিজে।
আমি আজ আর বলতে কোনো লজ্জাবোধ করবো না।একসময়ের সেরা ছাত্র যখন গভেটের তালিকায় পড়ে তখন কোনো পরিবারেরই মাথা ঠিক থাকেনা।আমারও পরিবার এইদিক দিয়ে কোনো ভিন্নধর্মী পরিবার নয়।আমার শিক্ষক শিক্ষিকা এবং পরিবারসহ আমার সকল অভিভাবক যেখানে আমার কাছে আশা করেছিলো (Golden +), সেখানে আমি তাদের হাতে এনে দিই (A-)
আর তখন থেকেই আমার জীবনে ঝড় আসতে শুরু করে।নানান জনের নানান কথা শুনতে হয়।আর সেইসাথে নিজের অতীতের ভুলটাও বুঝতে পারি।
কিন্তু সকল পরিস্থিতিই তো ক্ষণিকের।আমাদের জীবনেরও ঠিক সূর্যের মতো উদয় এবং অস্ত রয়েছে।আমাদের পুরো জীবনটাই একটা বিষ্ময়।এই জীবনে ক্ষণিকের জন্য অনেক কিছুই আসে যায়।সেই আসা যাওয়ার মাঝে অতি তুচ্ছ কথাবার্তায় হেসে খেলে কঠিন পরিস্থিতিকে দূর করে যে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে দিনশেষে সেইতো পড়বে বিজয়ের সাজপোশাক।
কেন জানিনা আজ আমার ভেতরে অসহ্য এক গভীর বেদনা গুমরে গুমরে মরতে চলছে।শতভাবে গোপন করার চেষ্টা করেও পারছিনা।এই ধরনের অভিজ্ঞতা সাধারণ মানুষের জীবনে বারবার ঘটে কি না সেইটা জানতে আমার বড্ড ইচ্ছে করছে!
পেটে ক্ষুধার জ্বালা আর
অন্তর মাঝে শুক্ল নিশা,
ধরবো কলম কিভাবে
পাইনা খুঁজে দিশা!
আমাদের সবারই জীবনের একটা স্বাভাবিক পরিনতি আছে।জীবনের কিছুটা অংশ আমরা অনেকসময় কল্পনায় লক্ষ করি।জীবনে সর্বক্ষণ বেদনার জায়গায় কে বা থাকতে চায়?সবাই তো মুক্তির পথ খুঁজে।আমিও কোনো ব্যাতিক্রমধর্মী মানুষ নই।সবাই যখন আমার জীবনকে দূরে ঠেলে দিয়েছে তখন আমি উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।প্রতিজ্ঞা করেছিলাম দেশের জন্য কিছু করবো।
বাড়ির সকলের পায়ে পড়ে যাই।কথা দিই তাদেরকে কিছু একটা হলেও করে দেখাবো।কিন্তু কেউ তো আর আমায় বিশ্বাসই করতে চায় না।অপরদিকে আমিও হাল ছাড়ার পাত্র নই,আমি নিজেকে স্বপ্নপথিক বলে মনে করি।অবশেষে অনেক কষ্টে বুঝিয়ে শুনিয়ে পরিবার থেকে শেষবারের মতো পড়ার সুযোগটা পাই।
আবারও আমার নতুন করে স্বপ্ন দেখার সুযোগ।সুযোগ হলো নিজেকে প্রমান করার।সবাই পরিবার থেকে একরকম বিরক্ত হয়েই আমায় ভর্তি করে দিলো প্রাণের স্কুল কাতিলা সবুজ সংঘ আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজে।অনিশ্চয়তার মাঝেও যেন নিশ্চয়তা খুঁজে পেলাম।তখন আমি আমার সুকঠিন নির্মম জীবনের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ি।ভর্তি আমার নতুন স্কুলে, নতুন বন্ধু বান্ধবী আর নতুন শিক্ষক।
আমি এক গরীব মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের সন্তান।জন্মের পর থেকেই কৃষিকাজের সাথে আমার গভীর সম্পর্ক।মাটির সাথে বেশ বন্ধুত্ব আমার।নতুন স্কুলের নতুনত্বের ভেতরেও সুযোগ পেলেই মাটির সাথে সম্পর্ক করতে আসি আর নতুন করে নতুন একটা স্বপ্ন দেখতে থাকি।
ভাবতে থাকি বড় হয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করবো।করতে থাকি শারীরিক কসরত।জীবনে ত্যাগের মধ্যে আহবান জানিয়ে অন্তরের মূল ধরে টানতে শুরু করি আর সেই সাথে ক্ষণিকের সেই বিরহটা ভুলে থাকার চেষ্টা।
বাড়ি থেকে আমার স্কুল অনেক দূর।হাঁটলে পরে ঘন্টাখানেকের ওপর লাগবে,আর ভ্যানে করে নিয়মিত যাওয়ার মতো অতোটা সামর্থ্য আমার নেই।তাই একটা সাইকেল কিনে নিই।শুরু হয় আমার নতুন পথযাত্রা।বই পাওয়ার পর আমার পড়াশোনার পারফরম্যান্সটা বেশ ভালো ছিলো।এককথায় বলা যেতে পারে যেঃ
আগের বিচ্ছেদের বেদনা হতে পড়াশোনার মধ্য দিয়ে সহজেই মুক্তি পেতে চেয়েছিলাম।
এবার আসি স্কুলের সেই দিনগুলোর কথায়।বাড়ি থেকে সবাইকে সালাম দিয়ে স্কুলের পথে রওনা।ঠিকঠাকভাবে পৌঁছে গিয়ে মাঠের ভেতর সাইকেলটা রেখে ক্লাসরুমে ঢুকেই দেখতে পাই ফাস্টব্রেঞ্চ ফাঁকা পড়ে আছে।কারো সাথে কথা না বলেই গিয়ে চুপচাপ বসে পড়ি।খেয়াল করি অন্যরা একে অপরের সাথে কথা বলছে। আমার সাথে কথা বলার মতো তেমন কেউ নেই,আর আমিও কারো সাথে কথা বলার চেষ্টা না করেই বাইরে বারান্দায় গিয়ে খুঁটি ধরে একাকি দাঁড়িয়ে থাকি।এমন সময় লক্ষ করি রেজিস্টার খাতা নিয়ে ক্লাসরুমের দিকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে আসছে ক্লাস টিচার অমিত কুমার চক্রবর্তী স্যার।স্যার দূরে থাকতেই আমি ক্লাসরুমের ভেতরে ঢুকে যায়।আর লক্ষ করি পিছনের ছিটে বসা বকর নামক ছেলেটি মেয়েদের সাথে বেশ কথাবার্তা বলছে, বলা যায় মেয়েদের সাথে তার খুব ভালো বন্ধুত্ব।
শপথ করা ছেড়ে দিয়েছি
ধরেছি নতুন পণ,
স্বপ্নপথিকের সেই কথাটা
জানো কি তোমরা স্বজন?
তোমরা কি সবাই জানো কোনো কাজে মধ্যগগনের গনগনে সূর্যের মতো হতে গেলে কি করতে হয়?সর্বপ্রথম নিজের চেতনাবোধ থেকে নতুনভাবে ওই কাজের সূচনা করতে হয়।তুমি যদি তোমার যোজ্ঞতার প্রমাণ দিতে চাও তাহলে আগে তোমার অস্তিত্ব কে টিকিয়ে রাখো।
তখন আমার জীবনের এমন একটা পর্যায় ছিলো যে পর্যায়ে আমার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নতুন কিছুর প্রয়োজন ছিলো।কিন্তু সেটা কি?
এই প্রশ্নটা মনের মাঝে বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে। আর অন্যদিকে লোকের হাজার কথা সহ্য করে ব্যাথাগুলো সব মনের মাঝে রেখে হাসির ছলে নিজেকে সান্ত্বনা দিচ্ছিঃ-
এইতো বেশ আমি!
ফাস্টব্রেঞ্চে একাই বসে এসব নিয়ে ভাবছি এমন সময় ক্লাসটিচার অমিত কুমার চক্রবর্তীর প্রবেশ। এই ভদ্রলোকটায় যে পরবর্তী তে আমার এতো কাছের প্রিয় মানুষ হবে তা কল্পনাতেও ভাবতে পারিনি।
ঘরে ঢুকতেই সবার সাথে স্যারকে আদাব জানালাম।স্যার বললোঃআদাব,সবাই কেমন আছো?সবার সাথে কন্ঠ মিলিয়ে আমিও বলার চেষ্টা করলাম ভালো আছি স্যার,আপনি কেমন আছেন?
ভালো,ভালো।
তারপর স্যার নিজের পরিচয় দিয়ে ক্লাসের এইমাথা থেকে ওইমাথা সবার পরিচয় নেন।আমিও নিজের পরিচয় দিই,আমার পরিচয় শেষে স্যার বলেঃ-
কুইনের ভাগ্নে?
আমি বলি জ্বি স্যার।কুইন নামের অর্থ রাণী।আমার শ্রদ্ধেয় খালার নাম কুইন,এই স্কুলেরই গর্বিত ছাত্রী ছিলেন।বাবার ছোটো রাজকন্যা বলা যায়।কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে রাজকন্যারও তার জীবনে অনেক যুদ্ধ করতে হয়,যুদ্ধশেষে সেও বিজয়ী হয়েছে।তাকে বিজয়ী হতে সর্বোচ্চ সাহায্য করেছে এই অমিত কুমার চক্রবর্তী স্যার।আমাকেও আমার জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে এই মহান শিক্ষক-ই সর্বোচ্চো সহযোগীতা করবে এমনটাই বলেছিলেন আমার খালা।
উনার কথা কমবেশি আমাদের স্কুলের সকলেই জানেন।জীবনযোদ্ধা হিসেবে আমি আমার খালাকে স্যালুট জানাই।সবার পরিচয় শেষ হতে না হতেই প্রথম পিরিয়ড শেষ।
ঘন্টা বাজার পরেই স্যার বেরিয়ে গিয়েছে কি না গিয়েছে সেইদিকে লক্ষ না করতেই দেখি পেছনের বকর নামক ছেলেটা লাফ দিয়ে সামনে এসে হাজির।আর এসেই তার চুলে হাত দিয়ে স্টাইল করছে আর ক্লাসের সবার উদ্দেশ্যে বলছেঃ-
এই চেংড়াপেংড়া সবাই মুন দিয়ে শুনো,আমারে এই ঘরেত একটা আয়না লাগামু।সবাই টেকা দিবু।আর এই মিয়েরা তুমরা বাড়িত থেকে একটা চিড়োনি আনবে।আমরা মুখ দেখমু আর মাতা হাচড়িমু।
কথাগুলো বলার পর সে আমার দিকে তাকিয়ে কেমন হাসি হাসলো,তার হাসা দেখে আমিও মুচকি হাসি দিলাম।
আমার অতীত জীবনের বিচ্ছেদের বেদনা যখন বাজতে থাকে তখন ভবিষ্যৎ জীবনের অনুক্ষণ যেন আমায় ডাক দেয়।এই দুই দিকের টানের মুখে পড়ে আমার মনের স্পর্শকাতর চিত্ত অত্যন্ত পীড়িত বোধ করে।এই পীড়ার আভাস দূর করার জন্য বকরের মতো একটা বন্ধু আমার খুব দরকার ছিলো।যে কি-না আমার ব্যাথা,বিচার,সন্ধান,সমস্যা সবকিছুকে তার নিজের মনে করবে।আর পাশে পাবো সকল সময়।
এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতেই আমাদের রসায়নের শিক্ষক স্বপন কুমার প্রামাণিক এসে হাজির।প্রথম দিন উনিও সেই একই পরিচয়পর্ব।আমি যখন অনেক ছোটো ক্লাস ওয়ান অথবা টু তে পড়ি সেইসময় থেকে স্বপন স্যার আমায় চিনে।স্বপন স্যার মানেই গল্প আর হাসিঠাট্টা।ক্লাসের সকল ছেলেমেয়ের সাথেই তার অনেক ভালো সম্পর্ক।ওইদিনের মতো ওই পিরিয়ড শেষ হওয়ার পরেই স্কুল ছুটি হয়ে যায়।
সাইকেলে করে বাড়ি ফিরে আসতে থাকি আর ভাবতে থাকি বকর নামক সেই ছেলের কথা।সবার সাথেই যেন তার বন্ধুত্ব।সে আমারও বন্ধু হলে খারাপ হয়না বোধহয়।
ছোটোবেলা থেকেই সহজ সাধনা করার বেশ ইচ্ছা আমার।আর নিজে যেহেতু চঞ্চল তাই কোনো চঞ্চল ছেলে দেখলেও বেশ ভালো লাগে।
স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে দুপুরের খাবার খেয়ে প্রতিদিনের মতো আবার সেই মাটির সাথে বন্ধুত্ব করতে যাই।সেদিন বন্ধুত্ব করতে গিয়ে আমার ভাবজগতে আরো কিছু নতুন ভাবের উদয় হলো।কেন জানিনা বকর নামক সেই ছেলের কথাগুলোর সাথে তার সেই হাসিমুখটা আমি তীক্ষ্ণ শাণিত বিদ্যতোজ্জল প্রকাশ ভঙিমায় দেখতে পাচ্ছি!
তপ্ত আকাশ এলিয়ে গেছে,,,,
মেঘগুলো সব হারিয়ে গেছে….
হঠাৎ করেই উদাস হাওয়া,,,,,
অমনি আমার পেছন চাওয়া….
নতুন স্কুল।আগেই বলেছি কোন বন্ধু নেই,যার কাছে আমার দুঃখগুলো জমা,দিয়ে সুখগুলো ভাগাভাগি করবো।তাই কিছু বন্ধু আমার খুব দরকার ছিলো।নতুন স্কুলে প্রথম বন্ধু কাকে করবে এ নিয়ে তেমন একটা দুশ্চিন্তা আমার ছিলো না।কারণ আমার একটা উন্মাদ বন্ধু প্রয়োজন ছিলো,যে কিনা অতিরিক্ত চঞ্চল হবে।আর বকরের মাঝে আমি সেই সবকিছু দেখতে পাই।তাই সেই সময় বকরই আমার বন্ধু হবার জন্য পারফেক্ট।
আমার সাথে তার চ্যাংটামু দিয়েই প্রথম আলাপ।তার ডায়লোগটা ছিলো এইরকমঃ-
আমি যুদি এই ইসকুলের পিরিনসিপাল হনুনি তাইলে পরে প্রতিডে ছাওয়াল পাওয়ালেক পেরেম করার সুযুগ করে দিনুনি।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন সে কেমন হতে পারে?
স্কুলের প্রথম দু এক সপ্তাহ আমি খুব চুপচাপ ছিলাম।বলতে পারেন ভাজা মাছটি উল্টে খেতে পারেনা।একাই ফাস্টব্রেঞ্চে বসি।ঝটপট পড়া দিই আর বসে পড়ি।স্কুল শেষে একাকী বাড়ি চলে আসি।প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথে কোনো কথা বলিনা।কিন্তু বকরের ওইরকম চঞ্চলতা দেখে আর ঠিক রাখতে পারিনা নিজেকে।
অবশেষে তার সাথে আমার বন্ধুত্ব হলো।বয়সে আমার তিনঘণ্টার বড়।দেখতে অনেকটাই আমার ফটোকপি।স্বাস্থ্যটাও আমারই মতন কিন্তু গায়ে খুব জোর।মেয়েদের প্রতি একটু বেশিই আসক্ত।অনেকেই আড়ালে তার নামের সাথে একটা খারাপ গালি যুক্ত করে দেয়।এতে বরঞ্চ সে খুশিই হয়।ক্লাসে অনেক দাপট তার।
এরকম একটা চ্যাংটা বন্ধু। সত্যি…….
তার সাথে বন্ধুত্ব হওয়ার পর ক্লাসে আমিও আমার দুষ্টুমি দেখাতে শুরু করি।তারপর দু একদিনে পুরো ক্লাসের সবাই আমার বন্ধু হয়ে যায়।কিন্তু খুব কাছের বন্ধু হয় মাত্র কয়েকজন।তাদের নাম বলতে গেলে অনেক স্মৃতিকথা উঠে আসে। যা হয়তো আমি সারাজীবন লিখলেও শেষ করতে পারবোনা।
আজ আমার কলম যদি সবকিছুকে দূরে ঠেলে ক্ষণিক দিনের আলোকে,অকারণ পুলকে,ক্ষণিকের সেই স্মৃতিকথার মাঝে ডুবে যায় তাহলে ক্ষতি কি?
না,আজ আর কোনো ক্ষতি নেই।নেই কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ।কারন পৃথিবীর সবটুকু সুখ আজ হয়তো আমার কাছে।
নতুন কাছের বন্ধুদের তালিকায় যুক্ত হয়ঃ-
কামরুন,সান্তনা,ইতি,আলামিন,বিলকিস এবং ছোনিয়া।বলতে পারেন আমার পরিবারের বাইরে আরেক পরিবার।আর প্রতিটা সদস্যই অনেক ঘনিষ্ঠ।আমার স্কুলে যাওয়ার এক অন্যতম কারণ ছিলো এই পরিবারের সদস্যদের সাথে আড্ডায় মেতে থাকা।
আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড তখনও শুধু বকর।তারপর কামরুনের সেই একই চাঞ্চল্যতা।বান্ধবী হিসেবে দারুণ। আমার বেষ্ট ফ্রেন্ডের তালিকায় সেও পড়ে যায়।আমার দুই বেষ্টুই একই চরিত্রের।তিনজনে এক পাগল টিম।আমাদেরকে তিন বন্ধু নয় তিন ভাই বোন বলতে পারেন।কারণ দেখতেও আমরা অনেকটাই সেরকমই।
এউসব পাগলের প্রবেশের কারণে আমার জীবনে তখন হাসির ছটার সুগম্ভীর আহ্বান।
বন্ধুত্ব কাকে বলে,কেমন হয়?তা আমি জানিনা।তবে এই দুই পাগলসহ বাঁকি পাঁচ জনের সাথে পরিচয় না হলে হয়তো আমি আজ বুঝতাম না যে রক্তের বাইরেও কোনো এক সম্পর্ক হয়,যার নাম বন্ধুত্ব।(চলবে………….)
Views: 19