শেষ নিবাস
____নাহিদ ফারজানা সোমা
“আর কোনো সন্তান যেন বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে না পাঠান” এ জাতীয় বাণী পড়তে তিতাসের এখন বিবমিষা হয়। তার সুলেখিকা ও সমাজসেবিকা মাও ফেসবুকে প্রায় এই বাণী দিয়ে থাকেন। নিজের প্রশংসা করে নয় বরং অন্যকে অনুপ্রাণিত করার জন্য তিনি এই বিষয়ে অনেক জ্ঞানগর্ভ লেখা লিখেন। নিজের সব শখ আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে তিনি আর তাঁর স্বামী কিভাবে বৃদ্ধ শ্বশুর -শাশুড়ি আর বাবা-মায়ের সেবা করতেন, সেগুলো বিস্তারিত লিখেন। মাঝে মাঝে ছবি সংযুক্ত করেন। যেমন, শাশুড়ির গালে গাল ঠেকিয়ে তিতাসের মা। তিতাসের দাদাকে জাপটে ধরে হাঁটানোর চেষ্টা করছেন বৃদ্ধের ছেলে অর্থাৎ তিতাসের বাবা। মা দাদির চুল আঁচড়ে দিচ্ছেন, চামচ দিয়ে মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন, শ্বশুরের জন্য নিজ হাতে উলের সোয়েটার বানাবেন বলে দাদার গায়ের মাপ নিচ্ছেন। আরও কত ছবি,কতো শত লেখা। সবই জাতিকে অনুপ্রাণিত করার জন্য। মায়ের নিজস্ব পেইজ আছে, মানুষকে মোটিভেট করে সঠিক পথের সন্ধান দেওয়া মায়ের লক্ষ্য। ফলোয়ার হাজার হাজার।
বাস্তব ছিল ভিন্ন। নানা-নানি নিজেদের বাড়িতে থাকতেন।দাদা-দাদি বাধ্য হয়ে এই বাসায় থাকতে আসতেন। তিতাসের বাবা জুবায়ের সাহেব তাঁদের
একমাত্র ছেলে। তিতাসের বড় ফুপু বড়লোক। কিন্তু তাঁর বাড়িতে কিছুদিন থাকলেই ফুপুর ছেলেমেয়েরা অসহ্যবোধ করে। তাদের নানা-নানির শোওয়ার জন্য একটা রুম ছেড়ে দেওয়া হয় , তাও নানা-নানি ঘুরে ঘুরে তাদের সাথে গল্প করতে
আসেন,এতে টাইম ও প্রাইভেসি দুইই নষ্ট হয়, বুড়ো-বুড়ি টয়লেট ঠিক রাখতে পারেননা। এসব অভিযোগে তাদের মা অর্থাৎ তিতাসের বড় ফুপুও বিরক্ত ও ক্লান্ত হয়ে পড়েন। বাবা-মাকে ইশারা ইংগিতে বুঝান মেয়ের বাড়ি এতোদিন থাকতে নেই, লোকে নিন্দা করে। বড় জামাই বরং মেয়ের চেয়ে শ্বশুর -শাশুড়ির বেশি কদর করেন কিন্তু
বৌ আর ছেলেমেয়েদের সম্মিলিত অনিচ্ছায় তাঁর ইচ্ছা ধোপে টিকে না।নিজের বাবা-মাকেই কাছে রাখার সাহস নেই। তাঁরা থাকেন গ্রামের বাড়ি ছোট ছেলের কাছে। তবে বড় ফুপুর শাশুড়ি ধোয়া তুলসীপাতা না, অতি ভয়ংকরী। বড় ফুপুর সংসারে সুবিধা করতে না পেরে আছেন নিজের বাড়িতে,ছোট ছেলে আর বৌকে নিয়ে। ছোট বৌমার কলিজাটা খাওয়া বাকি আছে তাঁর। হাসিখুশি সহজ সরল মেয়েটাও পড়ে পড়ে মার খেতে খেতে দজ্জাল হয়ে গেছে। এখন এক বাড়িতে থাকা হয় বটে তবে হাঁড়ি ভিন্ন। বুড়ি ফাঁপরে পড়েছেন ঠিকই কিন্তু চাপার জোর কমেনি। আর বুড়ির বড় বৌমা অর্থাৎ তিতাসের বড় ফুপুর জীবন শুধু সন্তান কেন্দ্রিক। ছেলেমেয়েদের মুখে তুলে খাওয়ানো, ভালো টিউটর ম্যানেজ করা, স্কুল আর কোচিং এ দিনরাত ছোটাছুটি.. এসব নিয়েই তাঁর জীবন। সেই জীবনে তাঁর স্বামী,বাবা-মা,ভাই -বোন, সবচেয়ে বড় কথা,তাঁর নিজেরই স্হান নেই। অন্যরাতো বহুদূর।
তিতাসের মেজফুপু খুব ভালো মানুষ। সত্যিকারের ভালো মানুষ। তিতাসের দাদা-দাদির মতো। কিন্তু ফুপা আর তাঁর মা মহা জাঁদরেল। ফুপুকে বাপের বাড়ি বেশি যেতে দেন না, তিতাসের দাদা-দাদি বেড়াতে গেলেও তেমন সমাদর করেন না। সপ্তাহ খানিক থাকলে ফুপা আর তাঁর মা মুখে সরাসরি কিছু না বললেও এমন ভাবসাব করতে থাকেন,দাদা-দাদি তারপরে আর থাকতে পারেন না। তবে ঐ সাত-আটটা দিন তাঁরা মেজো ফুপুর কাছে যে আদর আর সেবা-যত্ন পান, তাতে তাঁদের অন্তর একই সাথে ভরে ও পুড়ে যায়।পুড়ে যায় এই কারণে যে কেন মেয়েদের নামমাত্র পড়ালেখা শিখিয়ে অল্প বয়সে বিয়ে দিয়েছিলেন। তাহলে তো ফুপুরা আত্মনির্ভরশীল হয়ে সম্মানের সাথে জীবন যাপন করতে পারতেন, স্বামী-শাশুড়ির মন যুগিয়ে চলা আর হুকুমের দাস হয়ে থাকা লাগতো না।মেজো ফুপুর অনেক গুণ, নকশীকাঁথা সেলাই, নানা ডিজাইনের জামা কাপড় বানানো, মজার মজার পিঠা,আচার,আমসত্ত্ব বানানো,আরও কতো কি! ফুপু ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন ঘরের সবকিছু সামলে, এই প্রস্তাবের বিনিময়ে সপাটে চড় খেয়েছিলেন ফুপার হাতে। মেজ ফুপুর
মেয়ে নীরা বলেছে তিতাস আর তার বোন তরীকে,”আম্মা আর নানা-নানুকে নিয়ে যদি আলাদা থাকতে পারতাম।আব্বা আর দাদিকে আমার সহ্য হয়না একদম। ” মেজো ফুপুর শ্বশুর অনেক দিন প্যারালাইজড অবস্হায় থেকে মারা গিয়েছিলেন। ফুপু একহাতে শ্বশুরের সেবা যত্ন করেছিলেন, যত্ন করে খাওয়ানো, ময়লা সাফ করা, ওষুধ খাওয়ানো, পিঠে ঘা হয়ে গেলে ড্রেসিং করা। বিত্তবান ফুপা কোনো নার্স আনেন নি, বৌ থাকতে নার্স কেন? ফুপার ভাই বোনেরা দেখতে আসতেন প্রায় কিন্তু মেহমানের মতো। ফুপুর কোনো
অভিযোগ ছিল না। তিতাসের বড় ফুপু একবার বিরক্ত গলায় বোনকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “শ্বশুরের জন্য এতো কি রে?তাও যদি ভালো লোক হতো। তোকে তো কম জ্বালায়নি। ” মেজ ফুপু মৃদুস্বরে বলেছিলেন, “আমি শ্বশুর বলে সেবা করছি না,উনি একজন মানুষ, খুব কষ্ট পাচ্ছেন,তাই সেবা করছি।” আর সেই মানুষটা নিজের বাবা-মায়ের দেখাশোনা করার সুযোগ পান না।
ছোট ফুপু বিদেশে থাকেন। প্রবাসী পাত্রের সাথে বিয়ে হয়েছিল তা না, বিয়ের পরে ভালো থাকার জন্য, হবু ছানা-পোনার উন্নত জীবনের জন্য বিদেশে সেটল করেছেন। দুজনের কারোরই নিজ নিজ বাবা-মাদের এখন নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। বাচ্চা কাচ্চা হলে পরে দেখা যাবে।
গ্রামের বাড়িতে থাকা যায় কিন্তু দেখাশোনার কোনো লোক নেই। সব শহরমুখী। তাছাড়া ইট ভাঙা, রাস্তা বানানো, বিভিন্ন কলকারখানায় কাজ ,গার্মেন্টস কতো রকমের কাজ। তাই গ্রামে এখন গৃহকর্মী পাওয়া শহরের চেয়েও অনেক কঠিন। তিতাসের দাদার বিরাট বাড়ি তবে টিনের,মেঝে পাকা,সামনে-পেছনে অনেক জায়গা-জমি,বিশাল দীঘি। সব আছে,মানুষ নাই। দাদা জোবায়ের সাহেবকে বললেন,”এখানে তোরা থাক্। সারাজীবন স্বচ্ছন্দে কেটে যাবে।”
তিতাসের বাবা আঁতকে উঠলেন। এতো লেখাপড়া শিখেছেন, এতো বড় চাকরি করেন কি গ্রামে থাকার জন্য? তিতাসও বোঝে এটা সম্ভব না।কিন্তু দাদা-দাদি এই শূন্য রাজপ্রাসাদে থাকবেন কি করে? তিতাসদের বাসায় থাকার জো দাদা-দাদির আর নেই কারণ মা বলেছেন দুইজন মানুষ দিয়ে রান্নাবান্না, ঘর-দুয়ার পরিস্কার করা সম্ভব কিন্তু দুই ঘাটের মড়াকে দেখাশোনা করা সম্ভব না। ঠিক এই কথাটাই বলেছিলেন তিতাসের মা। আরও বলেছিলেন, ” নিজের বাপ-মার দেখাশোনা করতে পারিনা,আর তোমার বাপ-মাকে বছরের পর বছর পালতে হবে?”
বাবা মিনমিন করে বলেছিলেন, “তোমার বাপ-মা’র বাড়ি তো কাছেই, প্রায় প্রতিদিন ই তো যাও, তাছাড়া তোমার ভাই-ভাবীরা তো আছেই। ”
“আমার ভাইদের মতো ওই রকম ছেলে-ছেলেবৌ থাকার চেয়ে না থাকা ভালো। আর ভাই আর তাদের বৌরা করবে,আমি মেয়ে,আমার দায়িত্ব নেই? সবাই তোমার বোনদের মতো স্বার্থপর? সম্পত্তি ভাগাভাগির সময় তো ঝাঁপ দিয়ে এসে পড়বে। ”
মা নানার বাড়িতে যেয়ে কি সেবাযত্ন করেন তা তিতাস আর তরী ভালো করেই জানে। কিছু কেনা খাবার নিয়ে যেয়ে হাঁক ডাক করে নানা-নানুকে খাবার দিবেন, নানুর চুলে বেণী করে দেবেন,কিছু ওষুধ পত্র দিবেন,নানাকে এক বাটি স্যুপ খাইয়ে দিবেন,সেই সাথে মুখ চলবে অবিরাম। কেউ নানা-নানুর যত্ন করেনা, বিছানার চাদরটা কি নোংরা,নিজের বাসায় যে নানা-নানুকে নিয়ে মা নিয়ে যাবেন এই নরক হতে উদ্ধার করে,তার উপায় নেই। বেশির ভাগ সময় শ্বশুর -শাশুড়ি থাকেন, তাঁদের দেখাশোনা তিতাসের মা নাকি নিজ হাতে করেন,ভালোবেসেই করেন। জুবায়ের সাহেবেরতো কোনো ভাই নেই, কাজেই শ্বশুর -শাশুড়ির সবটুকু দায়িত্ব তিতাসের মায়েরই। আর এখানে তিন তিনটা ভাই, তাদের বৌ,অথচ বাপ-মায়ের কি হতশ্রী অবস্থা।
নানা-নানুর আসলেই কষ্টকর অবস্থা। হাত-পা কাঁপে, বিছানায় হঠাৎ হঠাৎ পেশাব হয়ে যায়, নিজের হাতে বা চামচ দিয়ে খেতে খুব কষ্ট হয় কাঁপুনির জন্য, নানির মাথা ঘোরা রোগ থাকায় প্রায় বমি হয়ে যায়, নানাকে ধরে ধরে বাথরুমে নিতে হয় কারণ তিনি চোখে প্রায় দেখতেই পান না। মামা-মামীরা সবাই চাকরিজীবী। চাকরি করে বাসায় এসে যেটুকু দেখা সম্ভব, সেটুকু ও দেখেন না। “আজ কেমন আছেন?” এটা বলে দায়িত্ব শেষ। নানা-নানু বেশি অসুস্থ বোধ করলে বাড়ির পাশের চেম্বারে বসা ডাক্তার সাহেবকে কল করেন। শুধু মাত্র নানা-নানুর কাজ করার জন্য একজন মহিলা আছেন বটে,তবে বড্ড ফাঁকিবাজ।
তিতাস দাদা-দাদির জন্য একজন নার্স রাখতে বলেছিল। সে আর তরী মিলে দাদা-দাদির খেয়াল রাখবে, অনেক কাজ করে দিবে,ভালোভাবে লেখাপড়া করবে এমন অনেক কথা দিয়েছিলো। বিনিময়ে মায়ের প্রচন্ড বকা খেয়েছিলো দুই ভাই -বোনই।
দাদা-দাদি বরাবরই আসা -যাওয়ার মধ্যেই থাকতেন। তিতাসদের বাসায় অপমানের মাত্রা যখন চরমে উঠতো,তখন বাড়ি চলে যেতেন।মাসখানিকের মধ্যেই আবার বস্তাভরা চাল, নানা রকম ফল,পুকুরের মাছ নিয়ে হাসিমুখে হাজির হতেন। ভীত,বিব্রত হাসি।
কিন্তু এবারে দাদা-দাদি খুব বেশি অসুস্থ, পরনির্ভরশীল। কাজেই এখানকার পাট শেষ। বিদায় দেওয়ার আগে মা নানা ভঙ্গিতে শ্বশুর -শাশুড়ির সাথে ছবি তুললেন। বাবাও। “দাদা-দাদির সাথে ছবি তুলো,তিতাস-তরী,দাদা-দাদিকে হাগ করো, কিস করো,” মায়ের মধুর স্বরের এই আহ্বানে তিতাস-তরী ছিটকে সরে এসেছিল ওখান থেকে। গতরাতেও
বাপ-মা’কে অনেক অনুনয় করেছে তিতাস,”দাদা-দাদিকে ওল্ড হোমে রেখে এসো।ওখানে অনেকের সাথে থাকবেন।আমরাও প্রতি সপ্তাহে দেখতে যাবো।”
“পাকনামি কম করে নিজের লেখাপড়ায় মন দাও ডেঁপো ছেলে। নিজেদের বাড়ি গিয়ে থাকবে, একজন মহিলা ঠিক করা হয়েছে সে দেখ্ভাল্ করবে,তাহলে সমস্যা কোথায় তোমার?”
“ওল্ডহোমে দাদা-দাদি আরও ভালো থাকবেন। ওখানে দরকারে ডাক্তার পাওয়া যায়।আরও অনেকে থাকেন।এতে দাদা-দাদির কষ্ট কম লাগবে।”
“কষে একটা থাপ্পড় লাগাবো। বৃদ্ধাশ্রমে রাখলে মানুষের কথায় টেকা যাবে?আমাদের ভবিষ্যৎ দেখি অন্ধকার। চুল পাকলেই ছেলেমেয়েরা রেখে আসবে ওল্ড হোমে।”
দাদা-দাদিকে গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। তিন মাস পরে এক রাতে হারিকেন থেকে আগুন লেগে দাদা-দাদি পুড়ে মরে গেলেন। তিতাসরা যখন পৌঁছালো, তখন লোকে লোকারণ্য। এতো লোক আগে ছিলো কোথায়?
কে বলে দাদা-দাদির সুহৃদের অভাব ছিল? কতোজন এসে কেঁদে গড়াগড়ি খাচ্ছে , কতোজনের মুখ থেকে কতো না জানা কাহিনী জানা যাচ্ছে যেটা তারা আগে চিঠি দিয়ে বা ফোনের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেনি।কাজ করার মহিলাটা দাদা-দাদিকে ঠিক মতো খেতে দিতোনা,বিকাল থেকে খাবার-পানি বন্ধ, খাটে শোয়ানো হোতো না,পেশাব ভেজা চাদরে রাতভর পড়ে থাকতেন দু’জনে কারণ ডায়াপার পাল্টানো হতো খুব কম,পায়খানার দরকার হলে মহিলাটা পা ধরে টানতে টানতে নিয়ে যেত কাছেই একটা গর্তের কাছে, ধোয়া-মোছার কোন বালাই ছিলো না, একবার এক মহিলা নাকি দাদা-দাদিকে দেখতে এসেছিল, দাদির মাথাটা অদ্ভুত লাগছিল তার কাছে, পরে সে দেখে লাল পিঁপড়া দিয়ে দাদির মাথা বোঝাই, সে যতোটুকু পেরেছে, মেরেছে।
মা মরা কান্নার ফাঁকে ফাঁকে বললেন,”হাতে পায়ে ধরতাম ঢাকায় থাকার জন্য, কিন্তু সেই একই কথা, গ্রামে যাবো,গ্রামে যাবো। নিজের বাড়ি ছাড়া ভালো লাগে না।”অমেরুদণ্ডী প্রাণী বাবাও ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদছেন। তিতাস ঘৃণায় সরে এলো।
নানা তার দু’ বছর পরে মরে গেলেন অনেক ভুগে। পিঠের আর তার নীচের অংশের মাংস পচে হাড় বেরিয়ে গিয়েছিল। খুবই দায়সারা গোছের সেবাযত্ন হয়েছিল প্রথম থেকেই, নইলে অমন হতোনা। নিজেরাও সেবা করলোনা, বৃদ্ধাশ্রমেও পাঠালো না।
নানী মরে গিয়েছিলেন মাথা ঘুরে মেঝেতে পড়ে যেয়ে। কেউ শব্দ টের পায়নি। নার্স পদবীধারী মহিলা সহ বাড়ির সবাই তখন খুব জনপ্রিয় একটা নাটক দেখছিল, কেউ হাই ভলিউমে গান শুনছিলো। নানী আনুমানিক ঘন্টা দুয়েক একাই পড়েছিলেন। ব্রেইন হেমোরেজ হয়েছিলো মাথায় প্রচন্ড আঘাত লাগায়।
তিতাসদের পরিবারে এখন বাড়তি ঝামেলা নেই। মামাদের বাসাতেও তাই। একসাথে হলে প্রায়ই বিদেশি সিস্টেম “ওল্ড হোমের ” কঠিন সমালোচনা চলে। কতোটা নির্দয় আর অমানুষ হলে মানুষ বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে দেয়।
আর তিতাসের বাপ,মা,মামারা? হাজার অসুবিধার মাঝেও বাপ-মা’কে নিজেদের কাছে রেখেছেন , ওল্ড হোমের চিন্তা মাথাতেও আনেন নি। বাংলাদেশীদের আর কিছু না থাক,মমতার কোনো অভাব নেই।
সমাপ্ত।
Views: 27