পথিকৃৎ বাংলা ভাষা
_______রাজদীপ মজুমদার
মেয়ে —
আজ ছুটির দিন কি মজা!
মা বিকালে যাবো বইমেলা!
মা —-
বলতো তার আগে আজ কি?
মেয়ে —–
জানি! কি যেন !!!
মা —-
বোকা মেয়ে!
আজ যে “আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস”।
মেয়ে —-
তুমি বলছ, “আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস”!
কিন্তু স্যার যে বলেছিলেন “আজ শহীদ দিবস”!
মা —
একি তো হলো! তোর অনেক প্রশ্ন!..
এবার ওই প্রশ্ন খাতা বন্ধ করে নিয়ে আয় তো!
ওই ইতিহাস বই কিংবা ভূগোল বইটি!
মেয়ে —–
একটু অপেক্ষা করো মা! আচ্ছা! মা,
এই শহীদ দিবস কি? কেন এই দিবস?
গল্পটা তো বলো.??
মা —
সময়ের কাল চক্রে বন্দী ছিল বাংলাভাষা,
এই ভাষা মুখে আনা ছিল পাপ!
মেয়ে – আচ্ছা! তারপর!
মা —-
নিজের ভাষায় কথা না বলার যন্ত্রণা
মহা যন্ত্রনা! সেই যন্ত্রনায় এক হলো বাঙালি!
ঢাকার রাস্তায় নামলো বিশাল জনজোয়ার,
সেই জোয়ারে পুলিশ করলো গুলিবর্ষন!
সেই সময় এই বাংলাদেশ ছিল
পরাধীনের শেকলে আবদ্ধ,
তাই তো ওই বর্বররা
কেড়ে নিতে চেয়েছিল
আমাদের মুখের ভাষা।
কিন্তু পারেনি!
হাজার রক্তের বলিধানে
স্বাধীন নিঃশ্বাস নিলো মাতৃভাষা।
এই যেটা আমি তুমি মুখে বলি।
এটাই তো আমাদের ভাষা!
এটাই বাঙালির ভাষা।
তারপর একদিন জাতিসংঘ ঘোষণা করলো;
২১ই ফেব্রুয়ারী “আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস।”
এই দিন শুধু বাংলা নয় সমস্ত দেশের ভাষা দিবস।
মেয়ে —
কিন্তু মা!
আমরা কি সঠিক ভাবে করি
বাংলার ব্যবহার!
এই যে সময়ের চাকায় বাংলা ধীরে ধীরে
পিছিয়ে যাচ্ছে? এখন নন্টে-ফন্টে,বাঁটুল দ্য গ্রেট, টেনিদা সব যে ইংলিশে অনুবাদিত!
সবায় চায় ইংলিশ বিদ্যালয়,
বাংলা বিদ্যালয়ে বলে খারাপ,
কি তবে বাংলার উত্থানের পথ?
মা —
উত্থানের পথ তোমার শিক্ষা গড়বে,
তোমার মন গড়বে, তোমার পথচলা গড়বে।
ভাষা থাকবে তোমার অন্তর মনে!
প্রণাম, শ্রদ্ধা দিয়েও এই
ভাষা দিবসের ঋণ ভোলা যায় না।
তোমার হাতে থাকবে বাঙালির ভবিষ্যৎ!
মেয়ে —
আচ্ছা!
মা —
এবার পড়ার বই নিয়ে আয়!
মেয়ে — আজ পড়া থেকে ছুটি!
Views: 26