তোমার পৃথিবীর সাত মহাদেশ
দেখা শেষ হল আজ,
অপেক্ষায় আরও আরও দেশ
ফুল-পাখির, পাহাড়-মাটির পৃথিবী-
মন্দ নয়তো!
যেদিন আমি এলাম তোমার গোলকে
কখনও গালিভার লেগেছে নিজেকে
লিলিপুটদের অবাক চাওয়ায়
স্তব্ধতার স্বাদ পেয়েছি।
নিজেকে হারিয়েছি যেন সেই কবে-
তোমার রঙে রঙিন আমি,
কাঁচের বাক্সে বদ্ধ জীবন।
বিষাদের আলোয় চোখ চকচকে
হারানো পৃথিবীর ভাসমান চিত্র এক।
তাও ভালো, মুঠোয় মুঠোয়
ভাল থাকার প্রেরণা পেয়েছি।
সেবার যখন তোমার ওই-
এন্টার্কটিকায় পৌঁছে গেলাম, ভুল করে-
ভুল ছিল কি? না, হঠাৎ তোমার আবিষ্কার!
জানতে চাইনি আজও।
গরম হাতের ছোঁয়ায় তুমি ছিলে ঠান্ডা
আর আমি- গরম গরম কথার তরজমায়
আগুনে ঝলসানো একটি পথহারা
বুনোহাঁস।
শুকিয়ে যাওয়া সহস্রাব্দের প্রথম ঝর্না আমি
জলের পরিধি ক্রমশ ক্ষীয়মান,
তাও চোখ যেন কুমারী জলধি।
তোমার ওই মহাদেশ খানিকটা অন্ধ
আমার চোখে পড়েনি চোখ কারও
আষাঢ়ের কুয়াশায় ছেয়ে যাওয়া ভবিষ্যৎ।
তোমার লিলিপুটদের হাতে ছিলো
তরল মাপার বড় বড় যন্ত্র
আমার শ্রাবনের ধারার মাপ নিতে আসা
ত্রস্ত লিলিপুটের দল।
আমার আমিতে পুরোটা পুড়ে যাওয়া,
দগ্ধ কয়লা তখন-
শুধু তোমার উষ্ণতার জন্য
নিজের গায়ে আগুন মাখি,
ভরসার ছোঁয়া ছাড়া কুঁজো
ডানাভাঙা একটি পাখি।
শাদা, সবুজ রং হল নষ্ট
প্রিয়দের তালিকা হারালো
অস্থায়ী বাসিন্দাদের রং হল-
আর তুমি যেন এক অবলা চিত্র।
কিছুকাল পরে ফিরেছিলে তুমি,
তোমার গায়ে গ্রীষ্মের উত্তাপ,
আমি তখন জমে যাওয়া
ভাবলেশহীন ভলকানো,
কপোলে শুধু শুকনো কিছু লাভার দাগ।
তবুও তোমার মহাদেশে মহাকালের গহ্বরে
অপেক্ষায় থাকি ক্ষীয়মান সন্ধ্যার।
উত্তরীয়র আড়ালে লবনাক্ত ঝর্না
তোমার চোখের চাহনিতে যদি বান ডেকে যায়
তবে তুমি আড়াল ভেঙে বাধ বসানোর-
শক্ত আশার সিমেন্ট এনো।
ভারী ভারী কংক্রিটের সীমানায় অবাধ্য
লিলিপুটের অত্যাচারের বেড়া দেবে কি?
তবুও তোমার সঙ্গে আছি,
তোমার যত দেশ আছে অদেখা
যত সহস্র রঙ আছে,
গায়ে মেখে বহু রঙের
মানুষ হতে পারি।
কুল হারিয়ে একা ভীষণ তাও-
রঙিন রকম সময় দিতে পারি-তোমার জন্য।
ভাঙা বাঁধের জলের ঢেউয়ে
ভেসে যাওয়ার দিক পেয়েছি,
গহীন চোখে গৃহহারা হবার সাধ স্পষ্ট।
যাবে? না ওই লিলিপুটেদের মাঝে
কথার কষ্টে প্রাণটি হারাবে?
Views: 201