শিশির আজাদ চৌধুরীর
-
একগুচ্ছ কবিতা
-
কথা ছিলো যাওয়ার
কথা ছিলো যাওয়ার।
দু’বুক চেপে আস্ত শুয়ে
ইচ্ছে ভীষণ বলার।
সন্ধ্যা হলে আসবো ছুঁয়ে
যাও ফিরে যাও ফের,
চরাঞ্চলে দোহাই কেন
রাতকানা সে মায়ের!
কড়া নাড়ার শব্দে যেন
খুলো তোমার দুয়ার,
কথা ছিলো যাওয়ার।
-
নিয়তি
পিটিয়ে পিটিয়ে সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছে,
অথচ বাদাম বিক্রেতাটা এখনো অনড় অটল
ভোর হতে যে দাঁড়িয়ে আছে ঠিক ঐখানে।
আর ব্যাটালিয়নের লাঠি তার উরুতে, বাহুতে;
আঘাতে আঘাতে বেঁকে যায় তার দীর্ঘ পিঠ।
তবুও সে পালাবে না কোথাও,
আজও যাবে না কোথাও এই পথ ছেড়ে।
গত দুদিন আগেও সে পালায়নি,
যখন সে অটোওয়ালা ছিলো;
আর তার অটোটা মুচড়ে দিয়েছে চোখের সম্মুখে।
তখনো সে দাঁড়িয়ে ছিলো এই রাস্তায়, ঠিক ঐখানে।
কারণ, সে পালাবে কোথায়?
সে জানে যারা পালায়, তাদের নিয়তি পালায় না;
যেখানে পালায় সেখানেই ক্ষুধা থাকে, দরিদ্রতা থাকে।
পালাতে পালাতে যদি এসব
কখনো হারিয়ে যেত কোনো মাঝপথে,
হয় তো সে পালাতো কোথাও।
-
এ আমার কেমন স্বদেশ?
ছলনার ছলে বা কোন বিব্রত করে নয়,
আজ কেবল জানার ইচ্ছে আমার
পৃথিবীর বুকে এ আমার কেমন স্বদেশ?
নিয়তির ধাঁধায় যখন আকাশ পাতাল
নিশ্চল নিশ্চুপ
এ দেশের শিরায় শিরায়
তখনো চলে অশুভ রক্তের চালান।
হা করা অজগরের মত নিশ্বাসের টানে
এক গালে গিলে খায় শতেক খাবার।
এখন ঘরে বসে আমারো নড়ে ঠোঁট,
কেঁপে ওঠে সমস্ত শরীর ;
গুম, খুন, ধর্ষিতার নিথর নগ্ন দেহ।
পত্রিকা ভরা টেবিল পাতায়
ইতিবৃত্ত করা পুরনো হেট লাইন গুলো
বারংবার প্রশ্ন করে এ তোমার কেমন স্বদেশ?
Views: 126