১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে তাঁর যখন জন্ম হল, তখন তাঁর পিতার আয় ছিল সামান্যই। পেশার খেলায়াড় হিসেবে তাঁর বাবা একটা অকিঞ্চিকর ভাতা পেতেন কাউন্টি ক্রিকেট সংসদ হিসেবে। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়াতে বারো বছর পর্যন্ত স্কুলে শিক্ষা লাভের পরেই জীবিকার সন্ধানে বেরিয়ে পড়তে হয় তাকে। ভাগ্যের সহায়তায় এমন একজন ব্যক্তির কাছে ভৃত্যের কাজ পান তিনি নিজে থেকে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়ান। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে সে পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকেই গ্রহন করে এবং চালিয়ে যেতে থাকে সাহিত্য সাধনা। উপরের বর্ণিত দুঃখ-দুর্দশাগ্রস্ত এই মানুষটি হলো এইচ জি ওয়েলস।
তার ভূতপূর্ব মনিবই ওয়েলসের ভেতর অনুরাগ সঞ্চার করায় বিজ্ঞানের প্রতি। তাঁর সুবিখ্যাত বই “টাইম মেশিন” প্রকাশিত হয় ১৮৯৫-এ এবং সঙ্গে সঙ্গে ওয়েলসকে চিহ্নিত করে দেয় প্রতিভাধর সাহিত্যিক বলে।
“দ্য স্লীপার এ্যাওয়েকস” রচিত হয় ১৮৯৮ সালে। এই বইয়ের বৈশিষ্ট্য যে এর আদ্যন্ত বিপ্লববাদেরই জয়গান করে গিয়েছেন লেখক।
দ্য স্লীপার এ্যাওয়েকস এমন এক ব্যক্তি গ্রাহাম সম্পর্কে যে প্রায় দু’শ তিনশ বছর ঘুমায়। আর জেগে উঠে নতুন এক রূপান্তরিত লন্ডন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হয়ে। মূল চরিত্রটি তার স্বপ্নগুলি উপলব্ধি করতে জাগ্রত হয়, এবং ভবিষ্যতে তার সমস্ত ভয়াবহতা এবং বাধাগুলোকে প্রকাশ করে।
ঘটনার শুরু ১৮৯৭ সালে। নিরাময়ের জন্য ওষুধ গ্রহণ করে গ্রাহাম কোমায় চলে যায়। জেগে উঠেন ২১০০ সালের লন্ডনে। জেগে উঠার পরে গ্রাহাম জানতে পারেন প্রচুর সম্পদ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন তিনি!
আশেপাশের সবাই গ্রাহাম জেগে উঠায় আতঙ্কিত হয়ে উঠে। এদিকে, বছরের পর বছর ধরে হোয়াইট কাউন্সিল ট্রাস্টিরা গ্রাহামের সম্পদকে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক খাতে বিশ্ব ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ব্যবহার করে এসেছে এতদিন। এমতাবস্থায়, হঠাৎ জেগে উঠাতে ট্রাস্টির মেম্বাররা গ্রাহামকে অনেকটা বন্দীই করে রাখে। এভাবেই, এগিয়ে যাবে গ্রাহামের জেগে উঠার পরবর্তী ধাপগুলো।
বইটি মূলত সমাজতন্ত্র, বিপ্লবের বিশ্বাসঘাতকতাএবং কীভাবে অভিজাতরা একদিকে নিপীড়ন ও দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রের বিন্যাস করে তাই নিয়ে; অন্যদিকে প্রযুক্তির ব্যবহার এবং এর দ্বারা কোনো জনগোষ্ঠীকে চালিত করতে পারে তাই নিয়ে বইটির মূল আকর্ষণ।
দেব সাহিত্য কুটীরের এই প্রচ্ছদ এবং অলংকরণ গুলোই সবচেয়ে ভাল লাগে। নস্টালজিক ভাবে ছোটবেলায় ফিরিয়ে নেয়।
Views: 50