আমার সমস্ত টাকা হারিয়ে যাবার পর আমাকে যদি এমন কোন দেশের রাস্তাতে রেখে আসা হয় সেখানের ভাষা ইংলিশ তবে পাঁচ থেকে দশ বছরের ভেতরে আমি সম্পদশালী হয়ে উঠবো কারন এটা কেবলই একটা দক্ষতা।
একজন মানুষের আত্মবিশ্বাসের লেভেল ঠিক কোনখানে গিয়ে ঠেকলে সে এমন কথা বলে!
আর পৃথিবীর মানুষকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে এটা বলে ” you can’t hire me.
can’t hire me anymore!! ”
দিল্লীর খুব দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া এই মানুষটির নাম নাভাল রাভিকান্ত। একদম জিরো থেকে অর্থনৈতিক জীবনে হিরো হয়ে যাওয়া এই ব্যক্তির বিভিন্ন সময়ে করা টুইট, টিভি শো তে বলা কথা কিংবা সাক্ষাৎকারের গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহশালা হলো এই বইটি।
যেখানে সম্পদ ও সুখ কিভাবে তৈরী করতে হয় তারই পথ প্রদর্শন করেছে।
বইটির নামের আলমানাক শব্দের অর্থ হলো দিনপুঞ্জি। অর্থাৎ নাভাল রাভিকান্তের দিনপুঞ্জি। যা সংগ্রহ করে বইতে রূপ দিয়েছেন এরিক জর্গেনসন।
বইটিতে দুটি পার্ট আছে।
একটি wealth
অপরটি হলো Happiness.
১.
wealth হলো এমন একটা সম্পদ বা এ্যাসেট যা ঘুমিয়েও অর্জন করা যায়। wealth পার্টের এটা সবচেয়ে অাকর্ষনীয় উক্তি মনে হয়েছে আমার কাছে। উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেছেন টাকা কেবলই বিনিময়ের মাধ্যম মাত্র অথচ আমরা ধনী হবার জন্য কেবলই টাকা উপার্জনের চেস্টা করি অথচ আমাদের উচিত সম্পদ অর্জন করা।
wealth হতে পারে একটা কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা আপনি ঘুমিয়ে থাকলেও কাস্টমারকে সার্ভিস দিবে। কিংবা এটা বাড়ি যখন আপনি ছুটি কাটাতে যাবেন তখন ও সেখান থেকে ভাড়া পাবেন ইত্যাদি।
২. প্রতিটি মানুষের স্পেশাল নলেজ আছে। যেটা তাকে নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে। স্পেশাল নলেজ হলো এমন চমকপ্রদ বিশেষ লক্ষণের কম্বিনেশ যা আপনার ডিএনএ হতে আসে। যা ডিজাইন করে আপনার ব্যক্তিত্ব ও পরিচয়কে।
” No one can complete with on being you “.
শক্ত একটা কথা তবে সত্যই বটে।
৩. সম্পদ উপার্জনে ৯৯% চেস্টা ব্যর্থ হয় কেবল ১% ই সফল হয়। এর অর্থ এটা নয় যে ৯৯% চেস্টা আপনি করবেন না। বরং এটা অনেক কঠিন যে সফল ঐ
১% চেস্টাকে চিহ্নিত করা। যখন এটা খুঁজে পাবেন তখন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেখানে ইনভেস্ট করবেন আর বাকী সব ভুলে যাবেন।
৪. বিজনেসে যদি আপনি ঝুঁকিকে আলিঙ্গন করতে পারেন তবে সমাজ আপনাকে পুরষ্কৃত করবে।
“Learn to sell, learn to build. If you can do both, you will be unstoppable. ”
৫. এই সমাজ যদি কোন বিষয়ে আপনাকে ট্রেনিং দিয়ে দক্ষ হিসাবে তৈরী করে যে কাজটা কিভাবে করতে হবে সেটা সমাজ আরও অনেকেই সেভাবে তৈরী করতে পারে তাই ঐ কাজের ক্ষেত্র আপনার বেতন কম হয় যেহেতু আপনার পরিবর্তে অনেক জন পাওয়া সম্ভব। সুতরাং আপনাকে এমন কোন কিছু করতে হবে যা অন্যরা জানে না সেটা কিভাবে করতে হয় আর ঠিক তখনই আপনার সেই দক্ষতার চাহিদা বেশী।
৬.লিভারেজ: এই অংশের আলোচনা খুবই জটিল আর গুরুত্বপূর্ণ। লেবার দিয়ে পরিশ্রম করিয়ে আপনি যা উপার্জন করতে পারবেন তার চেয়ে বেশী পারবেন আপনার পুঁজিকে ম্যানেজ করে উপার্জন
করা শিখলে।
“If you get good managing capital, you can manage more & more capital much more easily than you can manage more and more people. ”
৭.হৃদয়ে দিয়ে উপার্জন করুন সময় দিয়ে নয়। যদি আপনি সম্পদকে অবজ্ঞা করেন তবে সে আপনার কাছ থেকে পালিয়ে যাবে।
৮. পড়তে ভালোবাসতে শিখুন। একটি বই পড়া মানে কোন রেসে অংশগ্রহন করা নয়। বইটি পড়ুন এবং সেখান থেকে শিক্ষাটা শোষন করে নিন 🙂
হ্যাপিনেস পার্ট নিয়ে অন্য আরেকটা রিভিউ দিবো অন্য কোনদিন।
বইয়ের নামঃ
The Almanack Of Naval Ravikant
লেখকঃ Eric Jorgenson
#বুক_রিভিউ
লিখেছেন সুমেরা জামান
Views: 41