ফুলকুমারের স্মৃতি
____শামীম
নদীর ধারের সেই ঘাটের কাছে,
বালু দিয়ে খেলার নেই সময়।
গরম বালুর ছোয়া পাওয়ার,
কতই না ইচ্ছা হয়।
আজও মনে পড়ে,
নদীর ধারের সেই গাছের কথা।
বালকসেনা সেখানে গেলে
হাসতো সেই গাছের পাতা।
গাছের মগডালে চড়ে,
হাজারও বারণ চিড়ে,
দিয়েছি অনেক লাফ।
পানির উপর ডিগবাজি দিয়ে,
পূরণ করেছি মানস অভাব।
বন্যা হলে, পানি এসে,হয় যখন আবরণ ;
সাঁতরায়ে সেই চড়ায় গিয়েছি,শুনিনি কারো বারণ।
ওপারে;জামগাছের নিচে, ভূত দেখার আশে,
গিয়েছি অনেকবার।
সেই কারণে আম্মুর হাতে,
খেয়েছি অনেক মার।
স্রোতের সাথে যুদ্ধ করে,
যখন দিতাম নদ পাড়ি ;
তখন দেখতাম অপেক্ষায় আছে,
বিশাল বৃক্ষলতার সারি।
তারা যেন আমায় ডাকছে,
অনেকক্ষণ ধরে।
তাইতো হাঁটুসমান জল হয়েছে,
তাদের কান্না পড়ে।
আমি উপস্থিত হওয়ার সাথেই,
আপ্যায়ন করেছে পেয়ারা গাছ।
জামগাছ আমায় টেনে তুলেছে,
এই কথাটাও সাঁচ।
হাঁসের সাথে দৌড় দিয়ে,
যখন করি মজা।
গায়ের গেঞ্জিটাও,
আমার কাছে লাগে বোঝা।
আমার বোঝা কমিয়ে, যখন রাখি গাছে,
বন্ধুর বোঝার ভাগ পেয়ে, সে মুচকি হাসে।
ডিঙির উপর উঠে যখন সাজতাম মাঝি;
গামছাটা কোমরে বেঁধে দেখাতাম কারসাজি।
মাঝে-মাঝে হয়ে যেতাম গায়ন।
নীল আকাশের নিচে,
আমার পিছে পিছে,
যখন উড়িত ডয়ন।
ডুব দিয়ে যখন,
পারি দিতাম নদী;
তখন মনে হতো,
তেঁজি ঘোড়ার মতো,
হতাম যদি!
নদীর তলদেশ থেকে তুলে এনেছি মাটি,
যখন ধরতাম বাজি।
তারই জন্য ভাইয়া দিল উপাধি,
খচ্চর, দুষ্টু,পাজি।
গায়ে পলি থাকলে
আম্মু দিত বকা।
চেষ্টা করতাম গায়ে তেল মেখে,
আম্মুকে দিব ধোঁকা।
নদ জয় করে যখন ফিরতাম ঘরে ;
কোথা থেকে যে,এক হাত আসে!ধরে আমার ঘাড়ে।
এরকম প্রশ্ন করে :-
গিয়েছিস কোথায়? কখন গিয়েছিস?
ভেবেছিলি আমায় দিবি ফাঁকি!
আমি শুধু হাত চুলকিয়ে,
স্তব্ধ হয়ে থাকি।
নদীর মাঝে নিরবিচ্ছিন্ন,
দিয়েছি অনেক ডুব।
সেই ডুব থেকে ফেঁদেছি গায়ে;
কতইনা অসুখ।
সেই নদীর কথা মনে হলে,
আজও অনেক ভাবি।
চোখের মাঝে ভেসে ওঠে
ফুলকুমারের ছবি।
Views: 18